ইসলাম



সহজ নামাজ শিক্ষা 

নামাজ পড়তে হলে প্রথমে আপনাকে পবিত্র হতে হবে। পবিত্র হওয়ার জন্য প্রয়োজন গোছলের,আর গোছলের ফরজ হল তিনটি-১। কুলি করা ২। নাকের নরম জায়গায় পানি প্রবেশ করানো। ৩। সমস্ত শরীল ভাল ভাবে পরিক্ষার করা। এবং মনে মনে পরিষ্কার হয়ার নিয়ত করা।
নামাজ পড়তে হলে অবশ্যই অজু করতে হবে। নামাজ যেমন বেহেস্থের চাবি ঠিক তেমনী নামাজের মূল হল ওজূ। অজুর ফরজ ৪ টি, ১। মুখ মন্ডল ধৌত করা, ২। কুনুই পযর্ন্ত ধৌত করা। ৩। মাথা মাসেহ্ করা। এবং দুই পায়ের টাকনু ধৌত করা।

"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম-আমি নাজাযের উদ্দেশে পবিত্রতা লাভের উদ্দেশে আল্লাহ্' সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে ওযু করিতেছি"

বলে প্রথমে দুহাত কব্জি পর্যন্ত- তিনবার ধৌত করার পর মুখে নাকে তিনবার পানি দিয়ে কুলি করবে নাক ঝাড়বে।
অতঃপর মুখমন্ডল ধৌত করবে (কপালের উপর চুল গজানোর স্থান থেকে নিয়ে দাড়ির নিম্নভাগ, এবং এক কান থেকে নিয়ে অপর কান পর্যন্ত-)
এরপর দুহাতের আঙ্গুলের শুরু থেকে কনুই পর্যন- তিন বার ধৌত করবে। প্রথমে ডান হাত অতঃপর বাম হাত।
আবার নতুন করে দুহাত পানি দিয়ে ভিজিয়ে তা দ্বারা মাথা মাসেহ্ করবে। দুহাত মাথার অগ্রভাগ থেকে নিয়ে পিছন দিকে ফিরাবে অতঃপর অগ্রভাগে নিয়ে এসে শেষ করবে। তারপর দুকান মাসেহ্ করবে। দুহাতের দুই তর্জনী কানের ভিতরের অংশ এবং দুবৃদ্ধাঙ্গলী দিয়ে বাহিরের অংশ মাসেহ্ করবে। এর জন্য নতুনভাবে পানি নেয়ার দরকার নেই।
অতঃপর দুপা টাখনুসহ তিনবার ধৌত করবে। প্রথমে ডান পা, তারপর বাম পা। ওজু শেষে এই দোয়া পড়া-
أَََشْهَدُ أَنْ لا إلَه إِلّا الله وَ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ



নামাজের ফরজ তেরটি।বাইরে ছয়টি এবং ভেতরে সাতটি

* নামাজের বাইরের ছয়টি ফরজ হলঃ , সম্পূর্ণ শরীর পাক থাকা। , কাপড়-চোপড় পাক থাকা। , নামাজের জায়গা পাক থাকা। , ছতর ঢাকা (পর্দা করা) , কেবলামুখী হওয়া। , নিয়ত করা।
* নামাজের বাইরের ফরজ সাতটি হলোঃ , দাড়িয়ে নামাজ পড়া। , তাকবীরে তাহরীমা বলা। , নামাজের মধ্যে কেরাত বা কোরান পড়া। , রুকু করা। , প্রতি রাকাতে দুটি করে সিজদা করা। , তাশাহুদ পড়া পর্যন্ত বৈঠকে বসা। , সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করা। উপরোক্ত ফরজ গুলোর মধ্যে একটি অপূর্ণ থাকলেও নামাজ হবে না।
* নামাজের ওয়াজিব ১৪টি / সুরা ফাতিহা পড়া / সুরা ফাতেহার সঙ্গে সুরা মিলানো / রুকু সেজদায় দেরী করা / রুকু হইতে সোজা হইয়া দাঁড়ানো / দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসা / দরমিয়ানী বৈঠক / দুই বৈঠকে আত্ত্যাহিয়াতু পড়া / ঈমামের জন্য কেরাত আস্তের জায়গায় আস্তে পড়া এবং জোড়ের জায়গায় জোড়ে পড়া / বিতিরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়া ১০/ দুই ঈদের নামাজে ছয় তকবীর বলা ১১/ ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাত কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা ১২/ প্রত্যেক রাকাতের ফরজ গুলির তরতীব ঠিক রাখা ১৩/ প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিব গুলির তরতীব ঠিক রাখা ১৪/ আস্সালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলিয়া নামাজ শেষ করা

জায়নামাজের দোয়াঃ


জায়নামাজে দাঁড়িয়ে নামাজ শুরুর পূর্বেই এই দোয়া পড়তে হয়, বাংলা উচ্চারন-ইন্নি ওয়াজ্জাহ তু ওয়াজ্ হিয়া লিল্লাজি, ফাত্বরস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল্ আরদ্বঅ হানি-ফাওঁ ওয়ামা-আনা মিনাল মুশরিকী-ন। অর্থ-নিশ্চই আমি তারই দিকে মুখ করলাম, যিনি আসমান যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং বাস্তবিকই আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই এরপর নামাজের নিয়াত তাক্বীরে তাহঃরীমা নামাজের ইচ্ছা করাই হচ্ছে নামাজের নিয়াত করা। মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়, তবে মুস্তাহাব। সমস্ত নামাজেই ,নাওয়াইঃতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়া'লা
( রাকাত হলে) রাক্ 'য়াতাই ছালাতিল
( রাকাত হলে) ছালাছা রাক্ 'য়াতাই ছালাতিল
( রাকাত হলে) আর্ বায় রাক্ 'য়াতাই ছালাতিল
(ওয়াক্তের নাম) ফাজ্ রি/ জ্জুহরি/'ছরি/মাগরিবি/ইশাই/জুমুয়া'তি
(কি নামাজ তার নাম) ফরজ হলে ফারদ্বুল্ল-হি/ ওয়াযিব হলে ওয়াজিবুল্ল-হি/ সুন্নত হলে সুন্নাতু রসূলিল্লাহি/নফল হলে নাফলি।
(সমস্ত নামাজেই) তায়া'লা মুতাওয়াজ্জিহান্ ইলা জিহাতিল্ কা'বাতিশ শারীফাতি আল্ল-হু আক্ বার।
বাংলায় নিয়াত করতে চাইলে বলতে হবে, আমি আল্লাহ্' উদ্দেশ্যে ক্কেবল মুখী হয়ে, ফজরের/জোহরের/আসরের/মাফরিবের/ঈশার/জুময়ার/বি'তরের/তারঅবি/তাহাজ্জুদের (অথবা যে নামাজ হয় তার নাম) 'কাত/৩র'কাত/ 'কাত (যে কয় রাকাত নামাজ তার নাম) ফরজ/ওয়াজিব/সুন্নাত/নফল নামাজ পড়ার নিয়াত করলাম, আল্লাহু আকবার
তাকবীরে তাহরীমা- আল্লাহু আকবার (৪বার) আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহ(২বার) আশহাদু আন্নামুহাম্মাদার রাসুল্লাহ‌(২বার) হাইয়া আলাস্ সালাহ(২বার) হাইয়া আলাল্ ফালাহ(২বার) কাদকামাতিস সালাহ্(২বার) আল্লাহু আকবার(২বার) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ(২বার) *সানাঃ (হাত বাধার পর(বুকের বা নাভীর উপর বাম হাতের উপর ডান হাত) এই দোয়া পড়তে হয়) উচ্চারণ : সুবহা-না কাল্লা-হুম্মা ওয়া বিহাম্ দিকা ওয়াতাবারঅ কাস্ মুকা ওয়াতা-লা জাদ্দুকা ওয়া লা-ইলা-হা গাইরুক। অর্থ-হে আল্লাহ ! আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আপনার মহিমা বর্ণনা করছি। আপনার নাম বরকতময়, আপনার মাহাত্ম্য সর্বোচ্চ এবং আপনি ভিন্ন কেহই ইবাদতের যোগ্য নয় নবী (সাঃ) নামায অবস্থায় মাথা নীচু করে যমীনের দিকে দৃষ্টি রাখতেন। তিনি আকাশের দিকে দৃষ্টি উঠাতে নিষেধ করেছেন। তাআউজঃ উচ্চারণ- আউযুবিল্লা-হি মিনাশ শাইত্বা-নির রাজীম অর্থ-বিতশয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাচ্ছি তাসমিয়াঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম অর্থ-পরম দাতা দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি এরপর সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হয়, আয়াত নং الْحَمْدُ للّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ বাংলা উচ্চারন আলহামদুলিল্লাহি রাব্লিল লামিন বাংলা অনুবাদ সমস্ত প্রসংশা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার জন্য
আয়াত নং الرَّحْمـنِ الرَّحِيمِ বাংলা উচ্চারন আর রাহহমানির রাহিম বাংলা অনুবাদ যিনি পরম করুনাময় মহান দয়ালু
আয়াত নং مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ বাংলা উচ্চারন মালিকি ইয়াওমিদ্দিন বাংলা অনুবাদ যিনি বিচার দিনের মালিক
আয়াত নং إِيَّاكَ نَعْبُدُ وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ বাংলা উচ্চারন ইয়্যা কানাবুদু ওয়াইয়্যা-কানাসতাঈন বাংলা অনুবাদ আমরা যেন তোমারই এবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি
আয়াত নং اهدِنَـا الصِّرَاطَ المُستَقِيمَ বাংলা উচ্চারন ইহদিনাস সিরাত্বাল মুস্তাক্বিম বাংলা অনুবাদ তুমি আমাদের সরল সহজ পথ দেখাও
আয়াত নং صِرَاطَ الَّذِينَ أَنعَمتَ عَلَيهِمْ বাংলা উচ্চারন সিরাত্বাল্লাযিনা আন মতা আলাইহিম বাংলা অনুবাদ তাদের পথ যাদের তুমি অনুগ্রহ দান করেছ
আয়াত নং غَيرِ المَغضُوبِ عَلَيهِمْ وَلا الضَّالِّينَ َ
বাংলা উচ্চারন গাইরিল মাগদুবে আলাইহিম ওয়ালাদ্বদ্বো-য়াল্লিন বাংলা অনুবাদ তাদের পথ নয়,(যারা) অভিশপ্ত পথহারা হয়েছে। সূরা ফাতিহা তিলাওয়াতের পর পবিত্র কোরআনের যে কোন জায়গা থেকে তিলাওয়াত বা অপর একটি সূরা পাঠ করতে হয়।
মুক্তাদীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ জরুরীঃ ইমামের পিছনে মুক্তাদীও সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। কারণ রাসূল (সাঃ) এর বাণীযে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করবেনা, তার নামায হবেনা।” (বুখারী-মুসলিম) কথাটি ইমাম, মুক্তাদী এবং একাকী নামায আদায়কারী সবাইকে অন-র্ভুক্ত করে। কাজেই সকলকেই সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে। যেসমস- নামাযে ইমাম স্বরবে কিরাত পাঠ করেন, সে সমস- নামাযে মুক্তাদী ইমামের কিরাত শ্রবন করবে এবং নীরবে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পাঠ করবে। অন্যান্য সূরা পাঠ থেকে বিরত থাকবে। সুন্নীরা চুপকে চুপকে আর শিয়ারা জোরে আমিন বলতঃ। হাদীছে আছে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমীন বল, আল্লাহ তোমাদের দু কবুল করবেন। (মুসলিম)
রুকূ করাঃ কিরাআত পাঠ শেষে রাসূল (সাঃ) আল্লাহ আকবার (اَللَّهُ اَكْبَرُ) বলে রুকূতে যেতন। (বুখারী) রুকুতে স্বীয় হাঁটুদ্বয়ের উপর হস-দ্বয় রাখতেন এবং তিনি এজন্য নির্দেশ দিতেন। (বুখারী) তিনি কনুই দুটোকে পাঁজর দেশ থেকে দূরে রাখতেন। তিনি রুকু অবস্থায় পিঠকে সমান করে প্রসারিত করতেন। এমন সমান করতেন যে, তাতে পানি ঢেলে দিলেও তা যেন সি' থাকে। (বুখারী, তিরমিজী, তাবরানী) তিনি নামাযে ত্রুটিকারীকে বলেছিলেন, অতঃপর যখন রুকূ করবে, তখন স্বীয় হস্তদ্বয় হাটুদ্বয়ের উপর রাখবে এবং পিঠকে প্রসারিত করে সি'রভাবে রুকূ করবে। (আহমাদ) তিনি পিঠ অপেক্ষা মাথা উঁচু বা নীচু রাখতেন না। বরং তা মাঝামাঝি থাকত। (বুখারী, আবু দাউদ)
রুকুতে রাসূল (সাঃ) এই দূ পাঠ করতেন سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ)) উচ্চারণঃসুবহানা রাব্বীয়াল আযীম অর্থঃ আমি মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা ঘোষণা করছি। এই দূআটি তিনি তিনবার বলতেন। কখনও তিনবারের বেশীও পাঠ করতেন। (আহমাদ)
অতঃপর রাসূল (সাঃ) রুকূ হতে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন। তিনি এই দূ বলতে বলতে রুকূ হতে মাথা উঠাতেন, ( سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ) উচ্চারণঃ সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ। অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করে, আল্লাহ তার কথা শ্রবন করেন। (বুখারী-মুসলিম) তিনি যখন রুকূ হতে মাথা উঠাতেন, তখন এমনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়াতেন যে, মেরুদন্ডের হাড়গুলো স্ব-স্ব স্থানে ফিরে যেত। অতঃপর তিনি দাঁড়ানো অবস্থায় বলতেন, رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ)) উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হাম্ দ। হে আমার প্রতিপালক! সকল প্রশংসা তোমার জন্য। মুক্তাদী ইমাম উভয়েই দূ দুটি পাঠ করবে।

সাজদাহ করাঃ অতঃপর রাসূল (সাঃ) আল্লাহ আকবার বলে সাজদায় যেতেন। তিনি বলেছেন, কারও নামায ততক্ষন পর্যন- পূর্ণ হবেনা, যতক্ষন না সে সামিআল্লাহ হুলিমান হামিদাহ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াবে অথঃপর আল্লাহ আকবার বলবে, অতঃপর এমনভাবে সাজদাহ করবে যে, তার শরীরের জোড়াগুলো সুসি'রভাবে অবস্থান নেয়। সাজদাহ অবস্থায় পার্শ্বদ্বয় থেকে হস'দ্বয় দূরে রাখতেন। (বুখারী, আবু দাউদ) তিনি মাটিতে হাটু রাখার পূর্বে হস-দ্বয় রাখতেন। (ইবনু খুযাইমাহ) নবী (সাঃ) রুকূ-সাজদাহ পূর্ণাঙ্গরূপে ধীরসি'রভাবে আদায় করার নির্দেশ দিতেন। সাজদার দূআঃ সাজদাহ অবস্থায় তিনি এই দূ পাঠ করতেন, (سُبْحَانَ رَبِّيَ الاَعْلَى) উচ্চারণঃসুবহানা রাব্বীয়াল লা অর্থঃআমি আমার সুউচ্চ প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি তিনি এই দূআটি তিনবার পাঠ করতেন। অতঃপর নবী (সাঃ) আল্লাহ আকবার বলে সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন। তিনি বলেছেন, কোন ব্যক্তির নামায ততক্ষন পর্যন- পূর্ণ হবেনা, যতক্ষন না এমনভাবে সাজদাহ করবে যে, তার দেহের প্রত্যেকটি জোড়া সুসি'রভাবে অবস্থান নেয়।
*দুই সাজদার মাঝখানে বসাঃ প্রথম সাজদাহ সাজদার তাসবীহ পাঠ করার পরআল্লাহ আকবারবলে স্বীয় মস- উত্তলন করতেন। দুই সাজদার মাঝখানে ধীরসি'রতা অবলম্ভন করা ওয়াজিব। নবী (সাঃ) দুই সাজদার মধ্যবতী অবস'ায় এমনভাবে সি'রতা অবলম্ভন করতেন, যার ফলে প্রত্যেক হাড় স্ব স্ব 'ানে ফিরে যেত। (আবু দাউদ) দুই সাজদার মাঝখানে দূআঃ দুই সাজদার মধ্যখানে নবী (সাঃ) এই দূ পাঠ করতেন,(اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ وَ ارْحَمْنِى وَ اهْدِنِىْ وَ عَافِنِىْ وارْزُقْنِىْ)
উচ্চারণঃআল্লাহু ম্মাগ ফিরলী ওয়ার হামনি ওয়ার যুক্কনী
অর্থঃহে আল্লাহ! তুমি আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর, হিদায়াত দান কর, মর্যাদা বৃদ্ধি কর এবং জীবিকা দান কর এই দূ পাঠ করে নবী (সাঃ) আল্লাহ আকবার বলে দ্বিতীয় সাজদায় যেতেন এবং প্রথম সাজদার মতই দ্বিতীয় সাজদায় তাসবীহ পাঠ করতেন। অতঃপর আল্লাহ আকবার বলে সাজদাহ থেকে মাথা উঠাতেন এবং দ্বিতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়ানোর পূর্বে বাম পায়ের উপর সোজা হয়ে বসতেন। এবং প্রত্যেক হাড় স্ব স্ব স্থানে ফেরত আসা পর্যন- বিরাম নিতেন। (বুখারী) অতঃপর হাতে ভর দিয়ে দ্বিতীয় রাকাআতের জন্য দাঁড়াতেন এবং প্রথম রাকাআতের ন্যায় সবকিছু করতেন, তবে ছানা আউযুবিল্লাহ পাঠ করতেন না। একথা বিশেষভাবে স্মরণ রাখা দরকার যে, নামাযের প্রত্যেক রাকাআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ফরজ। *তাশাহুদঃ নবী (সাঃ) চার রাকাআত বা তিন রাকাআত বিশিষ্ট নামাযের প্রথম দুই রাকাআত শেষে তাশাহ্*হুদ পাঠের জন্য বসার সময় দুই সাজদার মাঝখানে বসার ন্যায় পা বিছিয়ে বসতেন। (বুখারী)
তাশাহহুদের উচ্চারণঃ আত্তাহিয়াতু লিল্লাহি ওয়াস্ ছালাওয়াতু ওয়াত্বায়্যিবাতু আস্ সালামু আলাইকা আইয়্যুহান্ নাবিউ ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু আস্-সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালিহীন আশহাদু আল্লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু। এভাবে তাশাহ্হুদ পাঠ করার পর আল্লাহ আকবার বলে চার বা তিন রাকাআত বিশিষ্ট নামাযের বাকী নামাযের জন্য দাঁড়াবে। বাকী নামায পূর্বের নিয়মে সমাপ্ত করবে। তবে কিরাআতের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পাঠ করবে।
অর্থঃ আমাদের সব সালাম শ্রদ্ধা, আমাদের সব নামাজ এবং সকল প্রকার পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে। হে নবী, আপনার প্রতি সালাম, আপনার উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক আমাদের আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর আল্লাহর রহমত এবং অনুগ্রহ বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই, আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল
তাশাহ্হুদ পাঠের জন্য শেষ বৈঠকে বসা ওয়াজিব। তবে বসার সময় তাওয়াররুক করতে হবে। তাওয়াররুক অর্থ ডান পা খাঁড়া রেখে বাম পা ডান উরুর নীচ দিয়ে বের করে দিয়ে নিতম্বের উপর বসা। এভাবে বসে প্রথমে আত্যাহিয়াতু পাঠ শেষে রাসূল (সাঃ) এর উপর (দরূদ) সালাত পাঠ করতে হবে।
দরূদের উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাযীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাযীদ
অর্থ-হে আল্লাহ, দয়া রহমত করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন রহমত করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তার বংশধরদের উপর। নিশ্চই আপনি উত্তম গুনের আধার এবং মহান। হে আল্লাহ, বরকত নাযিল করুন হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রতি এবং তার বংশধরদের প্রতি, যেমন করেছেন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) তার বংশধরদের উপর।নিশ্চই আপনি প্রশংসার যোগ্য সম্মানের অধিকারী
দরূদ পাঠ শেষে দূ মাসুরা পাঠ করতে হবে(বুখারী), উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসী জুলমান কাছীরাও ওয়ালা ইয়াগফিরুজ্ জুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফিরলী মাগফিরাতাম মিন ইন্দিকা ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর্ রাহীম।
অর্থ-হে মহান আল্লাহ, আমি আমার নিজের উপর অনেক জুলুম করেছি (অর্থাৎ অনেক গুনাহ/পাপ করেছি) কিন্তু আপনি ব্যতীত অন্য কেহ গুনাহ মাফ করতে পারে না। অতএব হে আল্লাহ অনুগ্রহ পূর্বক আমার গুনাহ মাফ করে দিন এবং আমার প্রতি সদয় হোন; নিশ্চই আপনি অতি ক্ষমাশীল দয়ালু
অতঃপর প্রথমে ডান দিকে পরে বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে নামায সমাধা করবে।

শেষ বৈঠক সালাম ফেরানোঃ


বিতরের নামাজঃ বিতরের নামাজের পর ৩য় রাকায়াতে সূরা ফাতিহা অন্য কিরআত পড়ার পর আল্লাহু আকবার বলে হাত তুলে আবার হাত বাঁধতে হয় এবং দোয়া কুনুত পড়তে হয়
উচ্চারণ-"আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতা'ঈনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়া নু'মিনু বিকা ওয়া না তা ওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশকুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখ লা, ওয়া নাত রুকু মাইয়্যাফ জুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু ওয়ালাকা নুছাল্লি ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাস', ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখ'শা আযাবাকা ইন্না আযা-বাকা বিল কুফফা-রি মুল হিক "
অর্থ-হে আল্লাহ, আমারা আপনার নিকট সাহায্য চাই। আপনার নিকট গোনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি। আপনার প্রতি ঈমান এনেছি। আমরা কেবল মাত্র আপনার উপরেই ভরসা করি। সর্বপ্রকার কল্যান মংগলের সাথে আপনার প্রশংসা করি। আমরা আপনার শোকর আদায় করি, আপনার দানকে অস্বীকার করি না।আপনার নিকট ওয়াদা করছি যা, আপনার অবাধ্য লোকদের সাথে আমরা কোন সম্পর্ক রাখব না-তাদেরকে পরিত্যাগ করব হে আল্লাহ, আমরা আপনারই দাসত্ব স্বীকার করি। কেবলমাত্র আপনার জন্যই নামাজ পড়ি, কেবল আপনাকেই সিজদা করি এবং আমাদের সকল প্রকার চেষ্টা-সাধনা কষ্ট স্বীকার কেবল আপনার সন্ততুষ্টির জন্যই আমরা কেবল আপনার রহমত লাভের আশা করি, আপনার আযাবকে আমাওরা ভয় করি। নিশ্চই আপনার আযাবে কেবল কাফেরগনই নিক্ষিপ্ত হবে
ভূল হলে ক্ষমা করবেন এবং সংশোধন করার চেষ্টা করবেন। ইচ্ছে করলে কমেন্ট করতে পাবেন।   facebook এ আমি



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন